Header Ads

করোনার প্রভাবে নরসিংদীতে সবজি নিয়ে বিপাকে কৃষকরা

Amp newsportal


শেখ আব্দুল জলিল: করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নরসিংদীর পাইকারী সবজির বাজারগুলোতে ক্রেতা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ক্রেতার অভাবে ব্যাপক দরপতন ঘটেছে পাইকারী সবজির বাজারগুলোতে। গণপরিবহন সংকটের কারণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা আসছেন না সবজির বাজারে। এতে বাজারে সবজি বিক্রি করতে গিয়ে রিকশাভ্যানের ভাড়াও উঠাতে পারছেন না কৃষকরা। সবজির উৎপাদন খরচ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন শুরু হয়েছে কৃষকদের।
কৃষক ও কৃষি বিভাগের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নরসিংদী জেলার শাকসবজির খ্যাতি রয়েছে
দেশজুড়ে। এখানকার উৎপাদিত শাক-সবজির প্রায় ৭০ ভাগ-ই সরবরাহ করা হয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে, রপ্তানী করা হয় বিদেশেও। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে গত দুই সপ্তাহ ধরে পাইকারী সবজির বাজার বেলাবো উপজেলার বারৈচা, নারায়ণপুর, রায়পুরার জঙ্গী শিবপুর, শিবপুর উপজেলা সদর, সিএন্ডবি বাজার, পালপাড়া বাজারসহ সবজির সবগুলো পাইকারী বাজারে নেই পাইকারী ক্রেতা।
করোনাভাইরাস আতংক ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় পাইকারী ক্রেতার অভাবে বিক্রি করা যাচ্ছে না উৎপাদিত সবজি। স্থানীয়ভাবে আসা ক্রেতাদের নিকট কিছু সবজি বিক্রি করা গেলেও এসব সবজির ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। এতে উৎপাদিত সবজি বাজারে নিতে রিকশাভ্যানের ভাড়াও পাচ্ছেন না কৃষকরা। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় সার, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণ কিনতে না পারার পাশাপাশি মানবেতর জীবনযাপন করছেন কৃষকরা।
সোম ও মঙ্গলবার সরেজমিনে বেলাব উপজেলার বারৈচা ও নারায়ণপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আশেপাশের প্রায় ২০ গ্রাম হতে রিকশাভ্যান বোঝাই করে সিম, বেগুন, কুমড়া, লালশাক, ধনিয়া পাতা,শসাসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রির জন্য নিয়ে হাজির কৃষকরা। বাজারে প্রচুর সবজি উঠলেও ক্রেতা একেবারে কম। বাজারে প্রতি মণ বেগুন বিক্রি হচ্ছে একশ টাকায়, সীম বিক্রি হচ্ছে দুইশ বিশ টাকা মণ, শসা বিক্রি হচ্ছে চারশ টাকা মণ। এছাড়া ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না ডাটা, লাউ, কুমড়াসহ অন্যান্য সবজির। বিক্রি করতে না পেরে অনেকে বাজারেই ফেলে গেছেন সবজি। করোনা পরিস্থিতিতে সবজির বাজারে দরপতন ঘটায় হতাশায় পড়েছেন কৃষকরা।
বেলাব উপজেলার হোসেননগর গ্রামের কৃষক জাকারিয়া বলেন, বিক্রির জন্য সকাল ৮ টায় বারৈচা বাজারে বেগুন নিয়ে আসি। অথচ সকাল গড়িয়ে দুপুর ১২ টা বেজে গেলেও কেউ বেগুনের দাম জিজ্ঞাসা করেননি। সবজি বিক্রি করতে না পারলে সংসার নিয়ে খাব কী? সার, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণ কিনবো কীভাবে?
হোসেন নগর গ্রামের অপর বেগুন চাষী আলমগীর পাঠান ও দড়িকান্দি গ্রামের সীম চাষী রমজান আলী বলেন, আমরা দুই বিঘা জমিতে বেগুন ও সীম আবাদ করেছি। বর্তমানে সীম ও বেগুনের বাজার দর এত কম, যা দিয়ে শ্রমিক খরচ ও ভ্যান ভাড়াও দিতে পারি না। যার কারণে জমিতে যাওয়া ও পরিচর্যা বন্ধ করে দিয়েছি। ফলে ক্ষেতের বেগুন ও সীম ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।
রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর গ্রামের কৃষক রজব আলী বলেন, বেগুন ১০০ টাকা মণ ও সীম ২২০ টাকা মণ দর কষে আর বাড়ছেন না কেউ। দুই সপ্তাহ আগেও বেগুন বিক্রি করেছি ৭শ টাকা মণ ও সীম বিক্রি করেছি নয়শ টাকা মণ। এ দামে বিক্রি করলে রিকশা ভাড়াও পাবো না।
বারৈচা ও নারায়ণপুর বাজার হতে সবজি ক্রয় করে চট্রগ্রাম ও রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিক্রি করেন মো: রইছ মিয়া। তিনি বলেন, পরিবহন না পাওয়ায় এবং সবজির দাম কমে যাওয়ায় অব্যাহত লোকসানে পড়ে আমি সবজি কেনা বন্ধ করে দিয়েছি। করোনার প্রার্দুভাব কেটে গেলে আবার এ ব্যবসা শুরু করবো।
নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসলেহ উদ্দীন খাঁন সেন্টু বলেন, নারায়ণপুর ইউনিয়নসহ আশেপাশের এলাকাটি কৃষি নির্ভর। করোনা পরিস্থিতিতে সবজির মূল্য না পেয়ে কৃষি ও কৃষি শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছেন। সরকারীভাবে কৃষকদের সহযোগিতা দেয়া উচিত। অন্যথায় সবজি উৎপাদনে ধস নামবে।
বেলাব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজিম উর রউফ খাঁন বলেন, করোনার পরিস্থিতির কারণে ক্রেতা কম থাকায় সবজির বাজারে দরপতন হয়েছে। সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে দরিদ্র মানুষদের জন্য বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য সাহায্য দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কৃষকদের জন্য আলাদা করে কোন সহযোগিতার ঘোষণা এখনও আসেনি। আমি মনে করি করোনার প্রার্দুভাব কেটে গেলে সবজির বাজার আবার ভালো হবে।

1 comment:

  1. কুয়েত থেকে------শ্রমিক সমাচার পর্ব- ১

    লিখেছেনঃ-রফিকুল ইসলাম ভুলু (কুয়েত প্রবাসী)

    গণপ্রজাতন্রী বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি-------
    আর কতো খেলা চলবে এই নিরিহ প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে ?

    পিতা-মাতা, পরিবার-পরিজন ছেড়ে, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে, বিদেশে পাড়ি জমায় একটু সুখের আশায় ।
    অথচ বৈধ ভিসায় আসার পরেও বিনা অপরাধে, কর্মহীন, আকামা বিহীন,অপরাধী হয়ে, কখনো জেল-হাজতে নির্যাতন-নিপীড়ন ভোগ করে,এমনকি অনেক ক্ষেত্রে লাশ হয়েও দেশে ফিরতে হয় ।

    একজন বৈধ লোক অপরাধ না করা সত্ত্বেও কি করে তাকে অবৈধ বলা যায় । এটা কৃতদাস প্রথার চেয়েও জঘন্য একটা অপরাধ বলে মনে করি ।

    অবৈধ শ্রমিক কারা । যে বা যাহারা কফিল বা ব্যক্তি মালিকানাধীন অথবা কোম্পানি থেকে পলাতক হয়তোবা ৫০/১০০ জন এবং চুরি কিংবা সামাজিক কিছু অপরাধের কারণে জেল জরিমানা সহ যাদের সাজা হয়েছে ৫০/৬০ জন হবে । আর আকামা বিহীন কাজের সময় অথবা রাস্তায় চেকে যারা ধরা পড়েছে হয়তোবা ১৫০/২০০ জন হবে । এরা হয়তো হাতে গোনা সর্বমোট ৩০০/ ৫০০ জন হবে । এ সকল লোকজন সাধারণ ক্ষমার আওতায় পড়লে দেশে ফেরত নেয়া অথবা পাঠানো যেতে পারে ।

    এছাড়া বাকী শ্রমিকগন যাদের আকামা লাগে নাই অথবা লাগানো হয় নাই,তারা অবৈধ নয় কিন্তু তারা সকলেই পরিস্থিতির শিকার । এরজন্য দায়ী কে ?
    অথচ একই কাজের জন্য আনা শ্রমিক আকামা না লাগিয়ে অবৈধ বলে ফেরত পাঠিয়ে আবার নতুন করে ভিসা বিক্রির মাধ্যমে শ্রমিক আনা হচ্ছে । এটা কোন ধরনের মানবতার পরিচয় বহন করে ?

    আমি মনে করি এরজন্য দায়ী মালিক পক্ষ এবং কিছু ভিসা ব্যাবসায়ী আর উভয় দেশের প্রশাসনের কিছু লোকজন এবং দুর্বল ব্যাবস্থাপনা ও গাফিলতির কারণ । উভয় দেশের সরকারী প্রতিনিধিগণ সকল ঘটনা জানা সত্ত্বেও আলোচনা সাপেক্ষে এর সমাধান না দিয়ে শুধু সাধারণ শ্রমিকদের বিনা অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করার অর্থ হলো অমানবিক এবং অমানুষিকতার পরিচয় বহন করার শামিল বলে মনে করি ।

    পৃথিবী মানবের আবাদী স্থল । মানব বেঁচে থাকলে পৃথিবীতে আবাদ হবে । মৃত্যু মানবের নির্ধারিত ।এটা জানা সত্ত্বেও আমরা কেনো মানবতার দৃষ্টিকোন কোন থেকে তাদের ন্যায্য পাওনা এবং অধিকার থেকে বঞ্চিত করি ?

    একটি নিউজ দেখতে পেলাম । কুয়েত সরকার নাকি বাংলাদেশের সরকারকে চাপ প্রয়োগ করেছে, অবৈধ লোকজন না নিলে অন্যদের আকামা নবায়ন করা হবেনা । জানিনা কথাটা কতোটুকু সত্য । তবে বিদেশ নীতিতে এ ধরণের শব্দ ব্যবহার করা যায় কিনা অথবা করাটা কতোটুকু যুক্তি সঙ্গত এবং শোভনীয় কিনা তা'আমার জানা নেই । এতে বুঝা যায় জাতিগত ভাবে আমরা মেরুদন্ডহীন ।

    আমাদের দেশের মন্ত্রী, এমপি এবং প্রশাসনিক কর্তাদের জবাব দেয়ার মতো সে ক্ষমতা টুকু আছে কিনা জানিনা । আমার দেশের বৈধ শ্রমিক আনার পরে, তোমার দেশে আকামা না লাগিয়ে অবৈধ বানিয়ে জেল জরিমানা করে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে আবার নতুন ভিসা বের করে শ্রমিক এনে পুনরায় সমস্যার সৃষ্টি করা হচ্ছে । আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এর সুষ্ঠ সমাধান চাই এবং উভয় দেশের সুনাম বজায় রেখে সম্পর্ক অটুট রাখতে চাই । এর পরেও যদি সঠিক সমাধান না হয় । সোজা বলে দেয়া ভাই, আমাদের সম্পর্ক বজায় থাকুক । কিন্তু আমাদের দেশ থেকে নতুন করে কোনো শ্রমিক আমরা পাঠাবো না ।

    সরকারকে অনুরোধ করবো । দয়া করে বিদেশীর নিকট নিজের জাতিকে হেয়পন্ন করবেন না । ইরাক-কুয়েত যুদ্ধের সময় বাঙালী দেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলো জীবন রক্ষার জন্যে । তাই বলে কি বাঙালি না খেয়ে মারা গেছে অথবা সরকার প্রবাসীদের কোনো অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছে । প্রবাসীরা নিজেরাই তাদের জীবন-জীবিকার পথ বেছে নিয়েছে ।

    কুয়েতে মাত্র তিন লক্ষ লোক । এরা দেশে ফেরত গেলে না খেয়ে মারা যাবে না । আল্লাহ যার রিজিক যেখানে রেখেছে সে সেখানেই খাবে । তবে সরকার বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের বিনা সুদে ২৫/৫০ লক্ষ টাকা লোন প্রদান করে তাদের সুষ্ঠ ভাবে চলার সুযোগ দিলে প্রবাসের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির জন্য সুফল বয়ে আনতে পারবে বলে আমার ধারনা । অন্যদিকে সরকার প্রবাসীদের স্বার্থে উপজেলা ভিত্তিক নানা শিল্প, কল-কারখানা গড়ে তুলতে পারেন ।

    যাই হোক। বিশ্ব করোনার এই মহামারির দুর্যোগ মুহূর্তে আমার লেখার চিন্তা-ভাবনা ছিলোনা এবং উচিতও নয় । কিন্তু প্রবাসিদের নিয়ে আন্তঃমন্রনালয়ের বৈঠকের নিউজ পড়েই বাধ্য হলাম লিখতে । পরবর্তীতে প্রবাসীদের নিয়ে বিস্তারিত লিখবো ।

    পৃথিবীর এই করোনা মহামারির হাত থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন ।
    আমীন ।

    8 এপ্রিল ২০২০
    কুয়েত

    ReplyDelete

কপিরাইট @সময় নিউজ ২৪ -২০১৮ এই সাইটের কোন সংবাদ ও ছবি কপিরাইট করা সম্পূর্ণ বেআইনি . Powered by Blogger.